Monday, June 26, 2017

ত্রাতা














মুখে ঘাম, ভেজা বুক,
সাদা সাদা লবনের গুড়ো;
চোখেতে স্বপ্ন সেটা- সুরে চলে
অথবা বেসুরো,
চাউনি সুদূরে তার-
দেখছে সে আগামীর দিন;
আঁধারের বুকে জাগা নতুন এক সূর্য- রঙ্গিন।

কেউ তো জানে না, সে একমনে চোলেছে কোথায়-
কেন সে ছুটেছে আর কেন এত স্বপ্ন বিলায়,
কেন তার রোদেপোড়া মুখে নেই ক্লান্তির ঋণ,
আঁধার জীবনে কেন আনবে সে সূর্য রঙ্গিন ?

পায়ে পায়ে হেঁটে চলে,
কুড়োয় হয়তো ভ্রুকুটি,
অজানাতে ছুটে চলা-
অবসর নেই, নেই ছুটি।
ছুটছে সে আজকের আঁধারকে ছুটি দেবে বোলে,
ধূলোমাখা পা দু’খানি সুদিনের সন্ধানে চলে।

পৃথিবীর দায়ভার তার বুকে যেন আঁকা আছে,
স্বপ্নের ফেরীওয়ালা বিকারগ্রস্থ সমাজে,
নতুন ইশতিহার তার হাতটাতে বাধাঁহীন-
মানুষের চোখে আনে আগামীর সূর্য রঙ্গিন।

তাদের হাতটা ভারী-
যুগের অস্ত্রে সজ্জিত;
তারা জাগ্রত, আর
দ্বিধাকে কোরেছে পরাজিত
পৃথিবীর মুক্তিকে সে ঘোষণা কোরবে একদিন-
মুক্ত সে, বিপ্লবী- প্রত্যয়ে সূর্য রঙ্গিন।

বিপ্লবী














খবর এনেছে, এনেছে খবর
সুদিনের ফেরীওয়ালা,
অবিচারে আর অন্যায়ে সারা-
পৃথিবীটা নিশ্চলা;
শান্তি- আসবে, জেগে ওঠো- ডাকে বজ্রকঠিন হাত;
যুদ্ধভূমিতে আনবেই তারা বিজয়ের সংবাদ।

চোখ বুঁজে দেখা, মুখ বুঁজে বলা,
অন্ধ থাকার দিনে,
নতুন ঘোষণা হাতে নিয়ে ফেরে
মানুষের সন্ধানে,
ঘাড় গুজে মরা- দিনকাল তারা বিদায় কোরবে বোলে-
রক্ত ঝরিয়ে ছুটছেই তারা মানুষের কোলাহলে।

লক্ষ্য তাদের- চেতনার দ্বারে
আলোর স্পর্শ দেয়া,
মৃত মানুষের ভাগারে চাইছে
প্রাণ হোক আনা নেয়া,
মানুষে মানুষে ছেয়ে যাক এই পৃথিবী আরেকবার-  
বুকে প্রত্যাশা, চোখে প্রতিজ্ঞা- সেদিনকে আনবার।

ফেরিওয়ালা












খবর ছুটেছে হাতে হাতে, যার- খবর লুকানো ঘামে,
খবর বিলিয়ে ছুটে চলে যারা দিন বদলের খামে,
তোমার আমার খবরের বোঝা যার কাঁধে হয় পার-
সুদিনের খোজেঁ পাড়ি দেয় যারা আঁধারের পারাবার।

রাতের আঁধারে পথচলা শুরু, নতুন দিনের আশায়-
আগামী দিনের সন্ধান আনে রক্তের পরিভাষায়;
পথভোলাদের পথে তুলে ধরে অদেখা পথের দ্বার,
সুদিন আনার ফেরিওয়ালা তারা, মৃত প্রাণে ঝংকার।

ছুটে চলে চোখে স্বপ্ন নিয়ে, ঘাম ছোটে তার সাথে-
জীবনের দামে, বুক ভরে পরিহাসে আর অবজ্ঞাতে,
প্লাবনের মতো ছোটে ভেঙ্গে যত নিষেধের কারাগার,
দিক-দিগন্তে নিয়ে আসবে সে- নতুন ইশতিহার।

Saturday, June 24, 2017

চির-স্বার্থক

(নোয়াখালীতে জঙ্গী হামলায় শহীদ ভাইদের প্রতি)















রক্তের কালিতে করেছো সৃষ্টি
সময়ের বুকে এক অনন্য রচনা,
ক্ষুদ্রতার মাঝে মহা-মহতের উজ্জ্বল পথরেখা;
উন্মুক্ত করেছো চির স্বার্থকতার পথ
এই জীর্ণ পৃথিবীতে,
মুক্তির আস্বাদ নিয়ে চলেছো সম্মুখে
সকল তুচ্ছতাকে চিরতুচ্ছ করে,
সকল নিচুতাকে করে উন্মোচন
অসীম স্বস্থির পথে,
প্রশান্ত আনন্দে,
পূর্ণ প্রাণে,
পেছনে নির্জীবপ্রায় মৃত রুদ্রাঞ্চল
স্বার্থের কষাঘাতে রক্তাক্ত, বিক্ষত।

কীটের বাসার মতো- নীচুতায় দীর্ণ প্রাণ
তোমার মহত্ব হয়তো বোঝেনি এখনো;
কিন্তু তার কি দায় তোমার?
মৃতকে করেছো রঞ্জিত
বুকের উষ্ণ রক্ত দিয়ে,
সঞ্জীবনী সুধায়-
চেয়েছো মৃতের বুকে আবার প্রাণের উদ্ভোদন;
চেয়েছো মানুষ পাক, মানুষের পরিচয় ফিরে-
মানবতা হোক জাগ্রত

যারা আজো পথ পেতে চায়,
অন্ধকারে আলো চায়,
নিস্প্রাণ চোখের তারায় চায় আলোকচ্ছটা,
খুঁজছে চিরশান্তির অমোঘ নিশানা;
অন্তঃসারশূন্য ভোগে পথহারা ক্রন্দনে-
যাদের রক্তাশ্রু চায় স্বার্থক বিদ্রোহ,
স্বার্থপরতা আর প্রাণহীন প্রাণের দুঃশাসনে
তাদের মশাল হলে
নিজের দেহের স্নেহ পুঁড়ে।

উন্মোচিত করে দিলে মানবতা কত সুদূরের,
লোভের লোলুপ এই ত্রাসের জগতে
কিভাবে চলতে হয় পথ,
কোথায় সমাপ্ত যত ক্ষুদ্রতার ক্ষুদ্র সীমানা,
কোথায় লুকানো আছে জয়,
কোথায় লুকানো আছে অক্ষম পাশবিকতার-
মুখে ছোঁড়া বিদ্রুপের হাসি

পৃথিবী আমাদের নয়,
সত্যেরে ধারণ করে, তার দাবী করেছো নিশ্চিত;
চলেছো মুক্তপ্রাণে নিজের জগতে-
হাস্যমুখে
নিজের কর্ম পূর্ণ করে,
রচনা করলে সেই পথ,
যে পথ গিয়েছে চলে গৌরবের সর্বোচ্চ শিখরে

প্রতিদান

(হেযবুত তওহীদের সদস্যদের প্রতি নোয়াখালীর বর্বর, নৃশংস, জঙ্গী-হামলার প্রতিবাদে)  




















হায়েনা, তোদের চেনাটা ভীষণ ভার,
দেঁতো মুখে মিঠে হাসি মেখে, তালে থাকা-
মানবতা নিয়ে খুলেছি বুকের দ্বার;
তোর কাজ সেথা রক্তের স্বাদ শোঁকা!

মুক্তি নিয়েই দাড়িয়েছিলাম পাশে,
তোদের মূর্খ হৃদয় জাগাবো বোলে;
পিশাচেরা সব ঘৃনিত এক উল্লাসে-
নগ্ন করলি নিজের মুখোশ খুলে?

তোরা ভেবেছিস তোরাই বনের রাজা?
ক্রুর মনে বুঝি অমরত্বের স্বাদ?
সময় কেবল শানাচ্ছে তোর সাজা,
ক্রন্দন হবে আজকের আহ্লাদ

অন্ধ, দেখ রে চারপাশে চোখ খুলে,
তোর মতো আরো অতীত হয়েছে যারা;
ইতিহাসে তারা বিদ্ধ ঘৃণার শূলে,
তোর পথ দেখ তার দিকে, পথহারা

ঘৃণার পৃথিবী সাজালি নিজের হাতে,
হুজুগে, জঙ্গী - বিশেষণ নিয়ে শিরে,
আমাদের ক্ষমা পেয়েছিলি সুপ্রভাতে,
রাতের বেলা কি সে ক্ষমা আসবে ফিরে?

আগুনে জ্বালালি যারা এসেছিলো কাছে,
তোদের সকল আগুন নেভাবে বলে;
গলা কেটেছিস তাদেরই কি উল্লাসে!
কত আর যাবি, সীমানা পেরিয়ে গেলে?

মানবতা- তোর ধ্বংসের দাবী রাখে,
সময় করছে স্বাক্ষর তার পাশে;
ঘৃণিত মৃত্যু তোকে হাতছেনে ডাকে,
অভিশপ্ত ভাগারেই ঠাঁই শেষে

উন্মত্ততা, অন্ধ রোষের বিষে,
রক্তে মেশালি যে পঁচা আবর্জনা,
সহ্য করতে পারবি তো শেষমেশে,
তোর গ্রাসে যেই তুই হবি নিশানা

সময় কাটছে, গুণে গুণে পথ চল-
তোর পঁচা ঘায়ে দেখ ধ্বংসের ঘ্রাণ,
কিভাবে থামাবি- অসীমেতে উচ্ছল,
মানবতা নিয়ে দাড়ানো সবুজ প্রাণ?