একদিন হেঁটে যাবো,
তোমার হাতেই হাত রেখে,
সাবলিল মানুষের
স্রোত ভেঙ্গে, বহুদূরে-
বিকেলের রোদজ্বলা
বালিতে পড়ে আদিম পায়ের ছবি
সার বেঁধে আছে,
যেখানে ঝিনুক-সারি,
স্থবির এক সময়ের মতো;
সন্ধ্যের আবছায়া
আগলিয়ে রাখে যাহাদের,
স্নেহের কোমল
ছায়া ছুঁয়ে আছে খুব সহজেই,
পরম প্রেম যেন
সময়ের সাথে পরিণত।
যেখানে হিসেব
নেই,
প্রাচীন নাগরিকতা
শুধু প্রচ্ছন্ন স্মৃতি হয়ে থাকে।
ইট-কাঠ-পাথরের
দেশে,
আমরা চলেছি খুব,
প্রাণ নিয়ে শ্বাসে-প্রশ্বাসে;
শুধু ব্যস্ততা,
ভীড়, আর যত চেনা কোলাহলে,
এ হৃদয় বলে-
রাতের নি:শব্দতা
হরণ করেছে যে সময়-
এই দেশ- আমার
তো নয়!
যেখানে জীবন আর
মৃত্যুর ব্যবধান নেই,
যেখানে হৃদয় তার
নাগাল পায়না কিছুতেই,
মৃত শামুকের মতো
পড়ে থাকে লুন্ঠিত শত শত প্রাণ,
যেখানে ঘৃনায়
আর ভালবাসাটাতে নেই কোন ব্যবধান-
সে দেশ কি করে
আমার হয়!
তাই একদিন হবো
তুমি আর আমি,
সেই অবগুন্ঠিত
চির-পথের পূজারী।
যেথা দুপুরের
ঝিলে শান্ত-শালুক পাতাগুলো-
মৌন সাধুর মতো
ভাসে,
যেখানে রৌদ্দুর
আসে-
কথকতা নিয়ে তার
সোনালি স্বর্ণ-হৃদয়ের;
যেখানে হাসেঁর
সারি সুদূরে ঠিকানা খোজেঁ-
জলের বুকেতে ফেলে
গল্পের আল্পনা তার সময়ের।
যেখানে বাতাস
গায়,
পৃথিবীর স্পন্দন
তার ভাষা সহজেই বোঝে।
অথবা কুয়াশা নামে
মাতাল ঘ্রাণটা বুকে ধরে,
হারানো প্রেয়সী
যেন ফেরে-
জড়ায় সে পরম আদরে
কোন সকাতর প্রেমে।
পাওয়ার পুলকে
নামে,
মাঠে-ঘাটে-প্রান্তরে
চুপিসারে,
যেন অজানিত কোন
রহস্য মেখে তার গায়ে।
সময় হারায় সেই
অসীম সময়ে-
অবারিত জগতটা
উন্মুখ হয় তার ‘পরে।
কিংবা দুপুরে
ডাকা ঝিঁ ঝিঁ পোকা- যেথা সখা হয়,
সেখানে দুপুর-
যেন চিরতরে স্তব্ধ সময়,
সেখানে গাছের
সারি শ্বাশত আল্পনাতেই চোখ রাখে,
অপলকে-
মৌনতা যেথা ছবি
আঁকে,
তোমার আমার সেই
‘হেঁটে যাওয়া অসীমের দিকে’।
যেখানে শান্তি
ডাকে-
শান্ত-প্রাণের
যত ভুলে যাওয়া মানব আর তার মানবীকে।
বিকেলের সূর্যটা
ভালোবেসে সাজায় আশ্রম,
ঘাম-ধুলো-মানুষের
শ্রম-
যেই দ্বারে পায়
অবসর।
যে সময়ে নেই-
‘তারপর’;
শুধু আছে প্রাণ,
পূর্ণতা সেই মাটির আঘ্রাণে।
মিহিন ধূলোর রাশি
উড়ে চলে মোদের দোসর,
‘ভালোবাসা’ বলে
যায়, ফেলে যাওয়া মৃতের স্মশানে।
বলে যায়, চেয়ে
শুধু দেখো-
আর রেখো মনে,
তোমরা আমাদের আর আমরা সবার
সন্ধ্যানে।