সম্মুখে সেই পথ,
যে পথ বোঝেনা- সহজে হাঁটার সামান্য ফুসরৎ;
যে পথে চলে না, একটু থামা- নিজেকেই সম্ভোগ,
যে পথ মড়কে ঢাকেনি যুগের রোগ।
অনিয়ম এই প্রশস্ততায় ধীরে ধীরে পথচলা,
সময়ের রাহু গ্রাস করা এই আঁধারটা নির্জলা।
ঘরে ঘরে আজ নিপীড়নে-মৃত নতজানু ভেজাচোখ,
অশ্রু মোছাতে ছুটে চলো- তবে আজ প্রতিবাদ
হোক।
গর্জন আনো ঢেকে সাহারার সাইমুম, সাইক্লোন
বৈশাখী হোক শ্রাবণের ভেজা মন।
ঝিমাবে এখনো ঘরে বসে তুমি, থাকবে কি চুপ
করে?
আরো কোটি প্রাণ ঝিমায় অন্ধকারে।
দুই হাত তুলে মুক্তিকে খোঁজে, প্লাবিত চোখের
পাতা,
ডাকছে- “এসো হে, আমার মুক্তিদাতা”।
তারা বসে আছে, তুমিই আসবে-
ভাবছে প্রাণের তাপে,
মুক্তি আনবে এ মৃত্যুর অভিশাপে।
তারা বসে আছে, দেখবে তোমার বজ্রবাহুর জোরে-
সূর্যকে টেনে আনছো রাতের পরে;
আগুন জ্বালাবে শীতল-কাতর মুমূর্ষু পৃথিবীতে,
আগুন জ্বালাবে রক্তের পরিধিতে।
তারপরও রবে বসে?
নির্জীবতার ভ্রুকুটিকে সয়ে নিয়তির অভিলাষে।
নিয়তিতে ভেসে গেছে এতদিন মানুষের সম্মান,
নিয়তিতে ভাসে শত-কোটি মৃত প্রাণ,
তারাও চেয়েছে সুদিন আসবে, শান্তির ছায়া
পাবে,
মুক্তি মিলবে নিয়তির বিপ্লবে।
চেয়ে থেকে শুধু কেটেছে সময়, নিস্ফল কালগুণে-
ভাগ্যবিধাতা হেসেছেন আনমনে,
পরিহাসে তিনি বলেছেন “আরে, বোকার হদ্দ সব,
তুই-ই তো নিয়তি, তুই নিজে বিপ্লব।
স্রোতের জোয়ারে জাহাজ ভাসিয়ে সীমানার খোঁজ
নিতে,
আমি তো তোকে পাঠাইনি পৃথিবীতে!
মগজে দিয়েছি চেতনার বীজ, হৃদয় দিয়েছি- মন,
প্রতিকূলে তুই হাল ধর প্রাণপণ।
শোষণ, বিভেদ, অন্যায় মাখা দুস্থ এ বারিধীতে,
দুর্জয় তোর প্রত্যয়- যেন টলে নাকো কোনোমতে।
ছোটে যেন তোর রক্তে তুফান, বাতাসের ঝঞ্জায়-
তোর ছাপ থাক প্রতিটি ঢেউয়ের গায়।
সবকিছু ফেলে ছুটে আয় এই প্রতিকূলতাকে ঠেলে,
কোনকিছু নেই আয়েশের অঞ্চলে।
সব ত্যাগ করে ছুটে আয় তবে- সব হারাবার দেশে,
আমাকেই পাবি সবকিছু অবশেষে।
পৃথিবীটা পাবে ডাঙ্গার খোঁজ, নিয়তির খোলা
দ্বার,
বন্ধন সব করে ফেল চুরমার”।
সম্মুখের আহ্বান,
মেনে নেবে নাতো এক মুহূর্ত থামবার অপমান।
সে চায় রক্ত, সে চায় জীবন, সে চায় তিক্ত
ঘাম,
ভোলাতে ক্ষুদ্র-স্বস্থির সংগ্রাম।
সে চায় দু’চোখ সদাজাগ্রত, সদাসতর্ক মন
সে চায় গতি, ছুটে চলা প্রতিক্ষণ।
প্রতি মুহূর্ত সংগ্রাম, আর স্বচ্ছ পুরুষকার-
দুর্বলতার মৃত্যুতে ভেট তার।
এখন তোমার নয়তো সময় চোখ নিচু করে চলা,
তন্দ্রার নেই অবসর এই বেলা;
জেগে উঠো, ছোটো, প্রতিজ্ঞাতে মুষ্ঠিটা
দৃঢ় করে-
শান্তি আনতে, জীবন আনতে শীতল এই প্রান্তরে।