Sunday, April 4, 2021

হ্যানিমান আসলেন!

মানুষ মরছে ধুঁকে, রোগে-শোকে ত্রাসে

দিশেহারা ধরণীটা মুক্তি পিয়াসে-

সে সময়ই হ্যানিমান আসলেন;

রক্তিম পৃথিবীতে রোগের আধার

রুখতে এলেন নিয়ে মেধা ক্ষুরধার

সত্যকে শুধু ভালোবাসলেন!

 

আরোগ্য-নীতি এলো তাঁর হাত ধরে

চিরদিনই ঢাকা ছিলো যুগের আঁধারে।

রোগতত্ত্ব পেলো যৌক্তিকতার রূপ-

সিমিলিয়া দিয়ে রোগ নাশলেন!

এ কাজেই হ্যানিমান আসলেন!!

 

কিন্তু কী নিদারুণ দুর্ভোগ!

সত্য প্রকাশে মেনে অসহ্য নিপীড়ণ,

সংগ্রামী শির উঁচু রাখলেন-

অযোগ্য করে তাঁকে বিচারের প্রহসন,

যোগ্যতা দিয়ে তাকে ঢাকলেন।

 




আজকে আবার সেই চির হাহাকার

সত্যকে অবহেলা করার বিচার-

রোগের রাজত্বকে থামাতে চাইলে মানো-

যে সত্যে তিনি ভাসলেন!

যে সত্যকে নিয়ে আসলেন!!!


এমামুযযামান


নির্লজ্জ, বেহায়া, আর ধুরন্ধরের ভীড়ে,

মনুষ্যত্বের সত্ত্বাটি যেথা ক্রন্দন করে ফেরে-

মরুর বুকের ফুল হয়ে- সেই মরুতে আনতে প্রাণ,

যুগের এমাম আপনি এলেন- এমামুযযামান।

 

আল্লাহর দেয়া হুকুমকে আজ বহু দূরে, পায়ে ঠেলে,

তন্ত্র-মন্ত্র মাথায় নিয়েছি- নতুন বিধাতা বলে-

দান খয়রাত, আর উপাসনা দিয়ে ধর্মের বলিদান!

ভন্ডামি সব- জানিয়ে দিলেন- এমামুযযামান।

 



ধর্ম যেখানে পণ্য- শকুন বসেছে খুবলে খাবে,

স্রষ্টার সাথে মশকরা করে- ব্যবসাই সে সাজাবে,

ধ্বজাধারী এই মোল্লাতন্ত্র- ধর্মের অপমান,

সেই ভ্রান্তিকে দেখিয়ে দিলেন- এমামুযযামান!

 

আমরা রয়েছি মৃত এক জাতি- সারা পৃথিবীটা জুড়ে,

আবর্জনার স্রোতের মতো- ভাসি, কাঁদি তারস্বরে-

লা’নতের কালি চেহারায় মেখে নামের মুসলমান;

বাঁচাতে এলেন এই পৃথিবীতে- এমামুযযামান।

 

ব্যস্ত-ত্রস্ত ইবলিশ আজ, শেষ দিন সমাগত

ধ্বংস করতে- দাঁড়িয়ে, যাদের হৃদয় বেদনাহত।

সেই মানুষের হৃদয়ের দ্যুতি, প্রোজ্জ্বল অম্লান-

দান করেছেন, জীবনের আলো- এমামুযযামান।

 

মুক্তি নিয়েই এসেছেন তিনি- শান্তি পৃথিবী জুড়ে;

বিকৃতি আর ভন্ডামি সব ভেসে যাবে বহু দূরে।

তাঁর শির উঁচু করবেই তাঁর আত্মার সন্তান-

জীবন দিয়েই সালাম পাঠাবে, এমামুযযামান।

Tuesday, February 23, 2021

মাঝে মাঝে কেন টাকা পাই


 

মাঝে মাঝে কেন টাকা পাই-

চিরদিন কেন পাই না?

কেন মন হাসে, টাকার সুবাসে-

সে হাসি হারাতে চাই না।

 



মাসের শুরুতে, সুখেরও সুরতে-

বুকে আসো তুমি থাকিতে,

ক্ষণিকের পরে হয়ে যাও পর-

আগের মাসের বাকীতে।।

 

কি করিলে বলো পাইবো তোমারে,

থাকিবে ব্যাঙ্কে –লকারে,

কত কোঁথ দিলে থাকিবে এ ঘরে-

গহনা-গাট্টি প্রকারে!

 

ধারেতে, দেনাতে, চাওয়াতে, পাওয়াতে,

লেজে-গোবরে গেছে মিশিয়া-

আজি করি পণ, দেবো এ জীবন-

তোমারেই ভালোবাসিয়া।।

সময় এসেছে

 

সময় হয়নি এখনো কি তবে, এখনো কি রাত বাকী!

শত শত যুগ আঁধারে কেটেছে, রাত্রি ফুরোবে না কি?

অবিচারে কাঁদে পৃথিবীর ধূলো,

অশুভের ছায়া বড় জমকালো

তন্দ্রার ঘোরে চেতনারা সব মৃত্যুর মুখোমুখি,

শত বছরের জঞ্জাল আরো বয়ে যেতে হবে নাকি?

 


সত্যের বাণী ম্লান হয়ে আছে মিথ্যের বেসাতিতে

বহু অশ্রু বয়েই চলেছে চড়া দামটুকু দিতে,

ধর্মের বাণী গল্পকথায়,

পেটপূজকের জাল ফতোয়ায়,

আটকে রয়েছে, গা ভাসিয়েছে- ব্যবসার ধারাপাতে,

শান্তির আজ কবর সাজানো ধ্বজাধারীদের হাতে।

 

ভন্ড শকুনে ছেয়ে আছে এই পৃথিবীর প্রান্তর,

মানুষ মরবে, লাশ-উৎসবে মাতবে এ চরাচর-

ভন্ড এবং গোরখাদকেরা,

গড়েছে নিঠুর বিভেদের বেড়া

তারে কাটাতারে বন্দী করেছে মুক্তিকে বরাবর,

মানুষকে খাবে- ভাগাভাগি তার চলছে নিরন্তর।

 

হাতে হাত রেখে গ্রাস করে চলে যুগের হাঙর আজ

তন্ত্র-মন্ত্র, বিধানের ঢালে হায়েনার এ সমাজ

শোষিত সকল মানুষের কানে,

মিথ্যে আশার সান্তনা টেনে,

যথারীতি চলে- রক্তের ধারা শোষণের কারুকাজ,

সাধু বেশে এই রাত্রিতে একা শয়তান অধিরাজ।

 

এখনো কি তবু ঘুমিয়েই রবো, চেতনা জাগবে কবে!

রাত পাড়ি দেয়া যোদ্ধার চোখ এখুনি মেলতে হবে।

অশ্রু, রক্ত- এই অপচয়

আর এক ফোঁটা আমাদের নয়,

সত্যের আলো ফুটবেই এই চলমান বিপ্লবে,

সুদিনের আলো এবার আবার ধরার ধূলিকে ছোবে।

 

দাঁড়িয়েছে আজ শত মুজাহিদ সময়ের দ্বারে এসে,

সব অন্যায়, আবর্জনা- যাবে এই স্রোতে ভেসে,

আসবে শান্তি ন্যায়ের বিধান

ঘুচে যাবে সব বাঁধা ব্যবধান

তাওহীদ রবে, আঁধারের বুকে সূর্য উঠবে হেসে,

মানুষ বাঁচবে, জীবনকে আর মানুষকে ভালোবেসে।


রয়ে যাওয়া

পৃথিবী ধূসর হয়ে আছে,

মৃতের সখ্যতা নিয়ে কাল তার বয়ে চলে যায়,

চিৎকার, হাহাকার, ক্রন্দন – সব মিলে যায়-

ভাগাড়ে নিথর থাকা নিস্তব্ধতাটির কাছে।

 



ইতিহাস বুনে চলে,

অনাদিকালের স্রোতে চলমান পাওয়া ও না-পাওয়া,

ইতিহাস হয়ে রয়,

চেতনাবিহীন সব মানুষের চুপচাপ শুধু মরে যাওয়া,

ইতিহাস বেঁচে থাকে, শত বিস্মৃতিকে ভর করে-

সবকিছু ভেসে চলে যথারীতি যুগের জোয়ারে,

তুমি, আমি, আমাদের পর-

আর যারা সাজাবে বাসর,

শব্দ ও কথামালা যারা যারা গেঁথে যাবে; বিভাবরী হয়ে-

সময়ের পায়ে,

‘অতীত কাহিনী’ তাকে বলা হবে...তারপর,

...তারপর বিস্মৃত বাসর।

 

তবুও থাকবো বেঁচে,

হাওয়ায় যেমন ভাসে ইথারের চোরা খুনসুটি,

কর্মযজ্ঞ শেষে, সময় যখন দেবে ছুটি

আঁচড় থাকবে মহাকালে – আমরা ছিলাম,

নির্জীব প্রান্তরে একটি ক্ষণের কোনো উচ্ছলতার মাঝে,

ছিলো এই নাম-

প্রাণের স্পন্দন যে আনতে চেয়েছে কোনো ভোরে,

ক্ষীয়মান গ্রামে ও নগরে-

শান্তি আনার পণ নিয়ে একদিন জেগেছিলো তারা,

ছোট্ট বীজের মতো মন, ক্ষুদ্র চেতনা তার

বিবর্ণতার বুকে রঙিন বিন্দু হয়ে দিয়েছিলো সাড়া-

মহাকালের মাঝে একটি স্রোতের এক সৃষ্টি-প্রয়াসে,

যেখানে প্রাণের গুঞ্জন ভেসে আসে-

যেখানে শান্তি আসে,

স্বস্থিরা যাকে ভালোবাসে।

 

সেখানে থাকবে নাম-

অসীমের পানে চলা অভিযাত্রীর সারি থেকে-

একটি চেতনাবিন্দু, গিয়েছে তাহার ছোঁয়া রেখে,

একটি স্পন্দন আর, আলোর একটি ক্ষীণ রেখা

রয়ে যাবে আঁকা-

ইতিহাস মুছে যাবে, মুছে যাবে প্রজ্ঞায় সাজা কথামালা-

তবু সেই বিদায়ের বেলা,

একটি বিন্দু বুকে- টের পাবে একা মহাকাল,

একদিন এখানে ছিলো-

বিবর্ণ পৃথিবীতে রঙিন সকাল। 

ফাগুন বারতা

 

বহু বহুদিন পরে,

কলমটা হাতে ধরে,

ইচ্ছে করছে আজ লিখি কয় কথা-

শীত প্রায় গেলো চলে,

কুয়াশাও ফিকে হলে,

বুলির ঝুলিতে থাকে ফাগুন- বারতা।




আজকের সুদিনে,

ফুলে, ফলে, মৌবনে-

মৌমাছি মধু খেয়ে টাল হয়ে টলে

তার চেয়ে বেশি ঢোলে,

প্রেমের দিবস বলে,

মৌ লোভী আমাদের প্রেমের যুগলে



আরো ঢোলে পাঠকেরা,

ভাষার মাসটি সেরা-

হৃদয় জুড়িয়া থাকে শুধু বইমেলা

প্রকাশক টাকা গোণে,

নব ফাগুনে বনে,

ছাপার কর্মী দেখে বিরাট ঝামেলা!



কবিরা কলম খোঁজে,

কানের পেছনে গুজে,

ডানে চায়, বামে চায়, উপরে তাকায়

ফুল টানে, ফল টানে,

ভাষার জালিকা বোনে,

তারপর ছোড়ে তারে ফাগুনের গায়



রোগী কাতরে বলে,

ঋতুর বদল হলে-

গাঁটে গাঁটে কেন এত ব্যথা টনটনে!

ছটফটে মরে মন-

বাত করে জ্বালাতন,

খিস্তিতে মুখ ভরে- মরার ফাগুনে



আমি বসে বসে ভাবি,

ফাগুন কতটা জ্বালাবি,

টেনে এনেছিস এত দিবসের ঠেলা-

হাড়িমুখো গিন্নি সে,

বসিয়া হিসাব কষে,

কতটা করছি তারে আজো অবহেলা!



ফাগুনের জয়গানে,

ওষ্ঠাগত প্রাণে,

তবুও চাইছি আসে বসন্ত সবার,

চির জাগরুক থাক,

আনন্দ জয়ঢাক,

কোনোদিনও এটি যেন না হারায় আবার