হুজুর, আমি বান্দা নাদান, প্রশ্ন নাদান তাই-
মনের মধ্যে খটকা গেরো, খোলার বিধান চাই।
কালকে যখন কোরআন পড়ি,
ঘন্টা বাজায় মনের ঘড়ি,
একটা দু’টো প্রশ্ন মনে বাজাচ্ছে সানাই,
অনুমতি- আরজ করি, মনের আশাটাই।
জ্ঞানী বান্দা:
আরে, বলো, কি জানতে চাও, সময় বহুত কম,
হারুর গরুর কল্লাটাকে খেয়েছি বেদম।
শ্বাসের ঘরে হাফাস হাফাস,
পেটটা কখন করবে ধপাস,
ছুটলে তলা- শরম ভারী, ওরে বে-রহম;
তোর কথা বল, শুনে দেখি প্রশ্ন কি রকম।
নাদান বান্দা:
আল-বাকারায় কালকে দেখি, খোদার রুদ্ররূপ,
শাস্তি দেবার প্রতিশ্রুতি, ভীষণ বিরূপ।
ধর্মে যারা নেয় বিনিময়,
পবিত্রতা তার নাকি নয়,
আগুনে তায় পোড়াবে - তার নিস্তার নিশ্চুপ;
আমল হবে অঙ্গার আর জাহান্নামের ধূপ।।
জ্ঞানী বান্দা:
(স্ফূর্তি ছেড়ে, উঠলো তেড়ে, স্বরাজ মহাশয়,
তলার ধারা ছুটলে মাথায় এমন-তরোই হয়।
ধর্ম যে তার খাদ্য-সহায়,
ব্যবসা-পাতি, বিষয়-আশয়,
পেটের উপর পড়লে লাথি বেরোয় পরিচয়,
ব্যবসা-গোমর ফাঁক হলে তা সহ্য করার নয়।)
ওরে অধম, ওরে নাচার, মূর্খ, হে নচ্ছার-
দু’টো কলম কোরআন পড়েই এত অহংকার!
তুই বেয়াদপ, ভীষণ ফাজিল,
কিসের সাথে কি দিলি মিল,
ব্যাখ্যা ছাড়া আল কোরআনের স্পর্শ অনাচার;
যাই লেখা থাক, তফসীরে হয়- ইধার কে ওধার।
পষ্ট করে যতই লিখুন আল্লাহ সোবাহান,
আমরাই শুধু বুঝতে পারি কি বোঝাতে চান;
শিখেছি তা মেহনতে,
তুই কিনা আজ হর-হাভাতে,
যা লেখা তাই পড়ে করিস প্রশ্ন করার শা’ন;
মোদের গায়ে ছুঁড়লে কাদা খোদার অপমান।
নাদান বান্দা:
স্পর্ধা করুন ক্ষমা, হুজুর, পথ না পেয়ে শেষে-
আপনাতেই আসতে হলো এই দুয়ারে ভেসে।
ধর্ম এখন বেগার খাটে,
তাপ্পি মারা ঐ পকেটে,
দ্বীনের অধিকারটা এখন একদমই একপেশে;
হুজুর এবার দিন ফতোয়া, খোদার কথার শেষে।
খোদা বলেন- অতি সহজ, আমার এ কোরআন,
কামার, কুলি, কৃষক, শ্রমিক সবার তরেই দান।
ঐ সময়ের কাফের যারা,
শুনেই নাকি বুঝতো তারা,
উম্মি নবী- খোদার কথায় কি বোঝাতে চান;
বুঝিনা এই সহজ কথা- আমরা মুসলমান।
মিলাদ, জিকির, মুর্দা-দাফন, নামাজ, ওয়াজ যত,
টাকার বিনিময়ে দেখি চলছে রীতিমতো।
পড়াশুনার করে এবার,
ধান্দা নিলেন ব্যবসা করার,
খোদার অটুট বানী হলো ব্যাখ্যাতে বিক্ষত;
ইধার কা মাল ওধার – ব্যবসায়ের মর্জিমত।
ফতোয়া, আর তফসীরে সেই সহজ কথা ঢেকে,
কঠিন ‘মানে’র অন্তরালে ধর্ম কাঁদে শোকে।
আমরা সবাই ধর্ম-ক্রেতা
খোদার বানী পন্য হেথা
দিচ্ছি টাকা, বলুন হুজুর, কি ‘মানে’ এর থাকে-
দ্বীনের বিনিময়কে খোদার হারাম বলার ফাঁকে?

