Tuesday, October 17, 2017

নাদান প্রশ্ন


















নাদান বান্দা:
হুজুর, আমি বান্দা নাদান, প্রশ্ন নাদান তাই-
মনের মধ্যে খটকা গেরো, খোলার বিধান চাই
কালকে যখন কোরআন পড়ি,
ঘন্টা বাজায় মনের ঘড়ি,
একটা দুটো প্রশ্ন মনে বাজাচ্ছে সানাই,
অনুমতি- আরজ করি, মনের আশাটাই


জ্ঞানী বান্দা:
আরে, বলো, কি জানতে চাও, সময় বহুত কম,
হারুর গরুর কল্লাটাকে খেয়েছি বেদম।
শ্বাসের ঘরে হাফাস হাফাস,
পেটটা কখন করবে ধপাস,
ছুটলে তলা- শরম ভারী, ওরে বে-রহম;
তোর কথা বল, শুনে দেখি প্রশ্ন কি রকম


নাদান বান্দা:
আল-বাকারায় কালকে দেখি, খোদার রুদ্ররূপ,
শাস্তি দেবার প্রতিশ্রুতি, ভীষণ বিরূপ।
ধর্মে যারা নেয় বিনিময়,
পবিত্রতা তার নাকি নয়,
আগুনে তায় পোড়াবে - তার নিস্তার নিশ্চুপ;
আমল হবে অঙ্গার আর জাহান্নামের ধূপ।।


জ্ঞানী বান্দা:
(স্ফূর্তি ছেড়ে, উঠলো তেড়ে, স্বরাজ মহাশয়,
তলার ধারা ছুটলে মাথায় এমন-তরোই হয়
ধর্ম যে তার খাদ্য-সহায়,
ব্যবসা-পাতি, বিষয়-আশয়,
পেটের উপর পড়লে লাথি বেরোয় পরিচয়,
ব্যবসা-গোমর ফাঁক হলে তা সহ্য করার নয়।)


ওরে অধম, ওরে নাচার, মূর্খ, হে নচ্ছার-
দুটো কলম কোরআন পড়েই এত অহংকার!
তুই বেয়াদপ, ভীষণ ফাজিল,
কিসের সাথে কি দিলি মিল,
ব্যাখ্যা ছাড়া আল কোরআনের স্পর্শ অনাচার;
যাই লেখা থাক, তফসীরে হয়- ইধার কে ওধার


পষ্ট করে যতই লিখুন আল্লাহ সোবাহান,
আমরাই শুধু বুঝতে পারি কি বোঝাতে চান;
শিখেছি তা মেহনতে,
তুই কিনা আজ হর-হাভাতে,
যা লেখা তাই পড়ে করিস প্রশ্ন করার শা;
মোদের গায়ে ছুঁড়লে কাদা খোদার অপমান


নাদান বান্দা:
স্পর্ধা করুন ক্ষমা, হুজুর, পথ না পেয়ে শেষে-
আপনাতেই আসতে হলো এই দুয়ারে ভেসে।
ধর্ম এখন বেগার খাটে,
তাপ্পি মারা পকেটে,
দ্বীনের অধিকারটা এখন একদমই একপেশে;
হুজুর এবার দিন ফতোয়া, খোদার কথার শেষে


খোদা বলেন- অতি সহজ, আমার কোরআন,
কামার, কুলি, কৃষক, শ্রমিক সবার তরেই দান
সময়ের কাফের যারা,
শুনেই নাকি বুঝতো তারা,
উম্মি নবী- খোদার কথায় কি বোঝাতে চান;
বুঝিনা এই সহজ কথা- আমরা মুসলমান


মিলাদ, জিকির, মুর্দা-দাফন, নামাজ, ওয়াজ যত,
টাকার বিনিময়ে দেখি চলছে রীতিমতো।
পড়াশুনার করে এবার,
ধান্দা নিলেন ব্যবসা করার,
খোদার অটুট বানী হলো ব্যাখ্যাতে বিক্ষত;
ইধার কা মাল ওধার ব্যবসায়ের মর্জিমত


ফতোয়া, আর তফসীরে সেই সহজ কথা ঢেকে,
কঠিনমানে’র অন্তরালে ধর্ম কাঁদে শোকে
আমরা সবাই ধর্ম-ক্রেতা
খোদার বানী পন্য হেথা
দিচ্ছি টাকা, বলুন হুজুর, কিমানে’ এর থাকে-
দ্বীনের বিনিময়কে খোদার হারাম বলার ফাঁকে?

Tuesday, October 10, 2017

মরিচীকার শেষে

















স্বল্পকালের কল্পমায়ায় এসেছি এইখানে,
স্বপ্নজালের টানে-
জড়িয়ে নিলাম অনেক বাধন,
অনুভূতির আনন্দ-ধন,
কান্না-হাসির আলো-ছায়া, অন্ধ-ব্যকুল প্রাণে-
স্বপ্নজালের টানে

হাঁটতে থাকি জলের তৃষ্ণায় রুদ্র মরুর পথে,
দিবসে বা রাতে-
সামনে দেখি সরোবর,
মিষ্টি হাওয়া ছায়ার আকর,
তো আমার পথের সাথি, হাঁটবে যে মোর সাথে-
দিবসে বা রাতে

পাশেই কোথাও হল্লা-হাটি, আনন্দ-উল্লাসে,
তাদের কথা ভাসে-
ভাবছি তারা সাথেই যখন,
ভয় করি না, ক্ষুদ্র মরণ,
আনন্দে যে হাসছে সাথে, ধরবে হাত ত্রাসে-
তাদের কথা ভাসে

চলছি ছুটে এই পারাবার, স্বপ্ন নিয়ে চোখে,
স্বপ্ন-ভাঙ্গার লোকে-
চলছি যত দেখছি চেয়ে,
ভ্রান্তিতে সব থাকছে ছেয়ে,
পূর্ণ আমি পূর্ণতাতে, শূন্য আমি শোকে-
স্বপ্ন-ভাঙ্গার লোকে

সরোবরের ছায়া কেবল হচ্ছে মরিচীকা,
রুদ্র-তৃষ্ণার শিখা-
বন্ধু-বিহীন বন্ধুর পথ,
সঙ্গী কেবল ধূর্ত-শ্বাপদ,
ললাটে তার শত্রু কোথাও, বন্ধু কোথাও লিখা-
রুদ্র-তৃষ্ণার শিখা

বাঁধন-ঘেরা স্বপ্ন ছিড়ে একলা হাঁটার খেলা,
স্বপ্ন-ভাঙ্গার পালা-
ছুটছি আমি শূন্য হাতে,
মিথ্যে-বিহীন শূন্যতাতে,
সঙ্গে থাকুক ছিন্ন প্রাণের জীর্ণ অবহেলা-
স্বপ্ন-ভাঙ্গার পালা

ভাববো না আর কোথায় ছিলাম, কোথায় অবসর,
কোথায় বাঁধা ঘর-
একলা চলার নিয়মটাতে,
খুঁজবোনা ফাঁক কোনমতে
খুঁজবোনা কে দুহাত পেতে, কোথায় সরোবর,
কোথায় বাঁধা ঘর