Tuesday, November 14, 2023

এক্রোসটিক – ৬

 

ভাবনারা ছুটে চলে সীমানা পেরিয়ে,

লোহিত সাগর থেকে হিমালয় ছুঁয়ে;

আজকের দিন কিবা ধূসর প্রাচীনে-

ছিলাম যেখানে বেঁচে ভুলে যাওয়া গানে।

 




ভাবনারা ভালোবাসে গ্রাস করে নিতে,

লোলুপ চাওয়াটি জানে সীমানা পেরোতে;

থেসিয়াস যত পথ পাড়ি দিতে পারে-

কোশল বা ব্যাবিলন, বঙ্গে বা রাঢ়ে!

 

আগামীর দিন চায় তুমি থাকো সাথে,

কাছের জন্মে কিবা সুদূর আগামীতে,

শেষহীন প্রেম চায় ফেরে বার বার-

রক্তিম ভোর ফেরে তোমার আমার।

 

ঠিকানা বিহীন সেই সময়ের দ্বারে,

কাবেরীর তীর ছুঁয়ে, গঙ্গার পারে-

নাইবো আমরা ভুলে বিগত বেদনা;

একটি জন্ম পাবো পুরোতে বাসনা!      

 

চিন্তারা কেঁদে মরে সে সময়কে পেতে,

ঠিকই সে হারাবে ফের, পাবে সে হারাতে;

লিখবে সে গল্পটা পাওয়া ও না পাওয়ার-

খোয়ানো সে প্রেম পেয়ে- হারিয়ে ফেলাবার।

Sunday, November 12, 2023

নেতা এসেছেন!! (২)

 

চারদিকে বেজে উঠেছে কীসের ডঙ্কা! কেন কেঁপে উঠে ভোলগা থেকে গঙ্গা। কেন জাগে মন, কেন জাগে স্পন্দন- নেতা এসেছেন, ভেঙে দিতে যত শঙ্কা! বহুযুগ কেড়ে নিয়ে গেছে রাজতন্ত্রে পশ্চিমাদের গণ বা সমাজতন্ত্রে, শাসনে শোষণে হয়ে গেছি আজ নিঃস্ব, স্বার্থের ঘরে ধুঁয়ো দেয়া ষড়যন্ত্রে। ভুয়া শাসনের শোষণের এই বন্ধন, এনেছে দুঃখ, দিয়েছে কেবল ক্রন্দন, ‘মানবতা’ আজ বইয়ের পাতার ইতিহাস, প্রবোধবাক্য শুনতে শ্রতিনন্দন। এসেছে নতুন বিপ্লব- ডাক মুক্তির, এসেছেন নেতা - আলো হাতে মহাশক্তির, আঁধারের ঘোর কাটবে হাতের হাতিয়ার, আগুন জ্বলবে জ্বালাময়ী গান মুক্তির। ফুঁসেছে সময়, বিপ্লব জাগে চেতনায়, দুঃসময়কে ধ্বংসের চির-বাসনায়, নেতা এসেছেন- নিয়ে শান্তির পয়গাম, ক্লিষ্ট মানবে নিতে মুক্তির মোহনায়।

নেতা এসেছেন! (১)

 


আকাশ ছিলো রক্তিম শুধু কান্নায়, হাহাকারে, মানবতা! সে তো বন্দী যুগের জুলুমের কারাগারে। মুক্তিপাগল জনতার ক্ষোভ, ডেকে এনেছে নয়া-বিপ্লব, ডেকে এনেছে মুক্তির দূত, নিরাশার প্রান্তরে- শত বছরের দুঃখ ঘোচাতে নেতা এসেছেন দ্বারে।।



পূবে-পশ্চিমে, নগরে ও গ্রামে - যত মানুষের প্রাণ, চেয়েছে মুক্তিদাতা যে হবেন- সে নেতার উত্থান। মুক্তি দেয়নি সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্রও গত- মুক্তি পায়নি মানবতা গায়ে গণতন্ত্রের ক্ষত। শান্তি আসেনি, ব্যর্থ হয়ে হয়েছে অতীতের বলিদান- নেতা এসেছেন হাতে নিয়ে দিগ্ বিজয়ের ফরমান। মৃতের মতন বেঁচে থাকা যত মানুষের হাত ধরে নেতা এসেছেন- তুলে নিতে ফের জীবনের বন্দরে- ক্রন্দনরত যত মৃতপ্রায় ফিরে যাবে মুক্তির মোহনায় বিপ্লবী হয়ে উঠবে সময়- অসময় পার করে, নেতা এসেছেন জাগাতে জগৎ নতুন ইশতেহারে।

Thursday, November 9, 2023

প্রলাপ

যত থাক নিজে করা সম্পদ সম্ভার,

পূজনীয় সর্ব সময় উত্তরাধিকার,

ধারের ছুতোই তাই করি নিবেদন-

তাদেরই ফুলে-ফলে, তাদের বোধন।


নিজের ক্ষুদ্রতা তাতে করে পরিমাপ,

ব্লগেই আটকে রাখি আমার প্রলাপ……….

তোমার সাথেই

 তোমাকে নিয়েই দেখতে চেয়েছি, মানুষ যেভাবে দেখে-

মেঠোপথ যায় হারিয়ে যেভাবে দিগন্তে মাথা রেখে;

মধ্যরাতের কুয়াশারা ভাসে কি কথা বলবে বলে!

নিশ্চুপতায় হাহাকার মেখে ডাকে সে দিগঞ্চলে

 




দেখতে চেয়েছি, শিশিরে ঘাসে কেমন মিতালী পেতে,

রামধনুটার আবীর ছড়ায় -কী কথা লুকোনো তাতে!

দুপুরের রোদ কীভাবে এতটা নির্জনতা ডেকে আনে-

ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের সঙ্গত কোন সঙ্গীত যায় বুনে!

 

দেখতে চেয়েছি, ছোট্ট ছেলের ধুলোতে গড়ানো শেষে,

বিকেলের লালিমাকে কোন বার্তা পাঠায় হেসে,

দেখতে চেয়েছি কার টানে ফিরে ফিরে আসে ধ্রুবতারা,

কোন জন্মে সে এই পৃথিবীতে হয়েছে বন্ধুহারা!

 

চাঁদের আলোতে রুপালি নদীর শান্ত জলের টানে,

দেখতে চেয়েছি কত কথা রাখা, আছে তার কত মানে;

পৃথিবীর সব কাব্য চেয়েছি লিখতে তোমার সাথে,

চেয়েছি প্রেমের অক্ষর থাক পদ্যের ধারাপাতে

 

কবে কোথাকার কোন বিরহীর মৌনতা বুকে নিয়ে,

সন্ধ্যের ছায়া চুপিসারে নামে- রাতের বিরহ ছুঁয়ে,

ছুঁতেই চেয়েছি- যা কিছু আমার, যা কিছু আমার নয়-

বন্ধুর চোখ যেভাবে ছুয়েঁছে ধ্যানরতা মেঘালয়

 

তোমার সাথেই বুঝতে চেয়েছি- কীভাবে দেখবো সব,

কীভাবে জ্বলবে সবার হৃদয়ে চেপে থাকা বিপ্লব

ভেঙে যাওয়া সব মানুষ চিনবে নিজেদের অধিকার,

অন্ধের চোখে আলোর মশাল জ্বলবে আরেকবার

 

তোমার চোখেই দেখতে চেয়েছি- আমার মনের কোণ,

সব পাড়ি দিয়ে ছুটে পাওয়া কোনো ভীষণ উত্তরণ,

অনাদিকালের ইতিহাস, সব প্রশ্নের উত্তর-

যে চোখে রাখা তোমার আমার কোটি জন্মান্তর

এভাবে কেবল সুমনই লিখতে জানে!

 [সুমন চট্টোপাধ্যায় (কবীর সুমন) আমার সেই কৈশোর থেকে আমাকে বহু কিছু দিয়ে যাচ্ছে। আজকে তার পদ্য ও সুরের হাত ধরেই মধ্য বয়সে এসেছি, গিটার হাতে  নিয়েছি, জীবনটাকে দেখে যাচ্ছি। তাকে দেবার মতো আমার কিছু নেই। কেবল ভালোবাসা ও নিছক তারই কথাগুলো সাজিয়ে কয়েকটা লাইন ছাড়া……]












এভাবে কেবল সুমনই লিখতে জানে,

জীবনের ছবি পদ্যের গলিপথে!

সুমনই কেবল সঙ্গীত বয়ে আনে-

যে একা থাকে আমার একার সাথে।


সুমনই শেখায় বলতে ‘তোমাকে চাই’,

হৃদয়ের লাভা ছড়াতে বিশ্বজুড়ে,

সে জানে কতটা ভালো আবছায়াটাই

আঁধারের কোণে মোমের আলো সাথে করে।


সে শেখায় আগুন জ্বালতে আরেকবার

সে শেখায় বাঁচতে- মরে যেতে যেতে ফের,

সে পথিক- শান্ত শীতল সন্ধ্যেটার,

গাছের ছায়ার, ধুলো-ভরা পার্কের।


হাল না ছাড়ার ডাক আসে তারই ঠোঁটে,

অমরত্বের প্রত্যাশা হেলা করে,

চেনা দুঃখ, চেনা সুখ অস্ফূটে-

বেঁচে আছে শুধু তার সুরে ভর করে।


নাগরিক এই কবিয়াল ঠিকই জানে,

রেখাবের রূপ, সকালের রোদ্দুর,

প্রথম পাওয়া, না পাওয়াটার মানে;

বুকের ভেতরে বৃষ্টি পড়ার সুর।

 

গানওলা, তুমি আরেকটা গান গেও,

তোমার হাতেই আমার বেহালা রাখা,

ফাটকাবাজির দিনগুলো ভুলে যেও,

সুরে বেঁচে থাক মানুষের বেঁচে থাকা।