দুষ্মন্ত:
খেতে গিয়ে পড়ে যাওয়া দুই ফোটা জল
ছুঁয়ে দিল বুক আর বুকের আঁচল।
যদি দিতে চাও মোরে কোনো দক্ষিণা,
ওই দুই ফোটা জল করি প্রার্থনা।।
শকুন্তলা:
পড়ে যাওয়া জল ভাসে চির অনাদরে,
কখনো সাজে না সে যে প্রীতি উপহারে।
নিতে যদি চাও- নাও অশ্রুর ভার-
দান নিয়ে দাতা হও; করো সুবিচার।।

দুষ্মন্ত:
নেব আঁখিজল নেব আঁচলের ফুল,
ভালবাসা বুঝে নেব তার সমতুল।
তথাপি সে বুকছোঁয়া দু ফোটা জীবন
আবে হায়াতের মতো চায় দেহমন।।
শকুন্তলা:
আগ্রাসী প্রেম জানি সবকিছু চায়,
আলো, আলেয়ার ভেদ করে সে বিদায়;
তবু আলো চিরদিন প্রভা করে দান,
আলেয়া- সে কভু নয় আলোর সমান।
এ জগতে যাহা ঝরে, হারায় অকূলে
ম্লান হয়ে যায় ফুল শাড়ির আঁচলে,
যা থাকে, তা থাকে- শুধু হৃদয়ের ধন
এ দু’ফোঁটা জল কভু থাকে আজীবন?
দুষ্মন্ত
এ ধরাতে নয় কিছু অবিনশ্বর,
আলেয়ার আলো, চাঁদ-তারা-প্রভাকর।
মধু আর মধুপের মিলনের কথা
লিখেছেন মনবনে বিশ্ববিধাতা।।
ফুলের সুবাস, শোভা, মধু ও পরাগ,
সব মিলে সাজে ফাগুনের গুলবাগ,
নয় শুধু অনুভূতি বিরহের খেলা,
প্রেমযমুনার তীর খোঁজে রাসলীলা।।
শকুন্তলা:
তাই যদি হয়, তবে এ দু’ফোটা জল-
ধারণ করেছে এই হৃদয় কমল,
অশ্রুর মতো জানে সেও কথকতা,
প্রেম যমুনায় লেখা আছে সে বারতা।
আত্মসমর্পণে প্রেমের সাধনা,
সেখানে কি বাদ থাকে জল দুই কণা?
আমাকে্ গ্রহণ করো, প্রাণেশ আমার-
এ দু’ফোঁটা জল তাতে থাক উপহার।
[দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার সংলাপগুলো লিখেছেন যথাক্রমে সুধাচোর ও শাহীন]




No comments:
Post a Comment