Tuesday, April 3, 2018

তৃষ্ণা

দুষ্মন্ত:
খেতে গিয়ে পড়ে যাওয়া দুই ফোটা জল
ছুঁয়ে দিল বুক আর বুকের আঁচল।
যদি দিতে চাও মোরে কোনো দক্ষিণা,
ওই দুই ফোটা জল করি প্রার্থনা।। 
শকুন্তলা:
পড়ে যাওয়া জল ভাসে চির অনাদরে,
কখনো সাজে না সে যে প্রীতি উপহারে।
নিতে যদি চাও- নাও অশ্রুর ভার-
দান নিয়ে দাতা হও; করো সুবিচার।।
দুষ্মন্ত:
নেব আঁখিজল নেব আঁচলের ফুল,
ভালবাসা বুঝে নেব তার সমতুল।
তথাপি সে বুকছোঁয়া দু ফোটা জীবন
আবে হায়াতের মতো চায় দেহমন।।
শকুন্তলা:
আগ্রাসী প্রেম জানি সবকিছু চায়,
আলো, আলেয়ার ভেদ করে সে বিদায়;
তবু আলো চিরদিন প্রভা করে দান,
আলেয়া- সে কভু নয় আলোর সমান।

 জগতে যাহা ঝরে, হারায় অকূলে
ম্লান হয়ে যায় ফুল শাড়ির আঁচলে,
যা থাকে, তা থাকে- শুধু হৃদয়ের ধন
 দুফোঁটা জল কভু থাকে আজীবন?
দুষ্মন্ত
 ধরাতে নয় কিছু অবিনশ্বর,
আলেয়ার আলো, চাঁদ-তারা-প্রভাকর।
মধু আর মধুপের মিলনের কথা
লিখেছেন মনবনে বিশ্ববিধাতা।।

ফুলের সুবাস, শোভা, মধু  পরাগ,
সব মিলে সাজে ফাগুনের গুলবাগ,
নয় শুধু অনুভূতি বিরহের খেলা,
প্রেমযমুনার তীর খোঁজে রাসলীলা।।


শকুন্তলা:
তাই যদি হয়তবে  দুফোটা জল-
ধারণ করেছে এই হৃদয় কমল,
অশ্রুর মতো জানে সেও কথকতা,
 প্রেম যমুনায় লেখা আছে সে বারতা।

আত্মসমর্পণে প্রেমের সাধনা,
সেখানে কি বাদ থাকে জল দুই কণা?
আমাকে্ গ্রহণ করোপ্রাণেশ আমার-
 দুফোঁটা জল তাতে থাক উপহার
                         

[দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার সংলাপগুলো লিখেছেন যথাক্রমে সুধাচোর ও শাহীন]

              

No comments:

Post a Comment